বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

লালমোহনে মোবাইলে জুয়া, ধ্বংসের পথে ছাত্র ও যুবসমাজ 

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি

লালমোহনে মোবাইলে জুয়া, ধ্বংসের পথে ছাত্র ও যুবসমাজ 

দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলাজুড়ে অ্যানড্রয়েড মোবাইলের মাধ্যমে লুডু খেলা এখন জমজমাট জুয়ার আসরে পরিণত হয়েছে। এতে দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে ছাত্র ও যুবসমাজ। এক সময়ে যে লুডু বোর্ড ছিল কাগজে তৈরি, এখন তা মোবাইলে সফটওয়্যারের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এ মোবাইলের মাধ্যমেই দিন কিংবা রাতের গভীর পর্যন্ত চলছে জুয়ার আসর।

সরেজমিনে দেখা যায়, নাওয়া- খাওয়া বাদ দিয়ে কিশোর-যুবক, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া  ছাত্ররা উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের অলিগলি, চা দোকান কিংবা রাস্তার পাশে বসে এ ডিজিটাল জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ছে।

জানা যায়, স্মার্টফোনে লুডু কিং নামে একটি সফটওয়্যার ইনস্টল করে সর্বোচ্চ আটজন মিলে এ খেলা খেলে। খেলার ধরন রয়েছে দুই ধরনের। একটি অনলাইনের মাধ্যমে, অপরটি মোবাইলে একইসঙ্গে বসে খেলা যায়।

তবে অনলাইন ছাড়া একসঙ্গে চারজনের খেলার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। স্থানীয় একাধিক যুবক বলেন, চারজন মিলে খেললে একেকটি গেম শেষ হতে সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিট। প্রতি গেমে বাজি ধরা হয় ১০০-৫০০ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ আরও বেশিও হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, তিনি পেশায় একজন ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালক। এক সময় নিয়মিত তাসের মাধ্যমে জুয়া খেলতেন। এ খেলা তার নেশায় পরিণত হয়েছিল কিন্তু পুরাতন খেলা বাদ দিয়ে এখন তিনি মোবাইল ফোনে লুডু কিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে জুয়া খেলতেন। খেলতে খেলতে এমন নেশা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত আয়ের একমাত্র উৎস মোটরসাইকেলটিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে দেনার কারণে। এখন তিনি বেকার।

একজন স্কুলশিক্ষক জানান, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, চা দোকান, এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখা যায় এ জুয়ার আসর জমজমাট। এসব জায়গায় যারা লুডুর মাধ্যমে জুয়া খেলে, তারা একটি মোবাইলের মাধ্যমে একসঙ্গে বসে। 

লালমোহন প্রেস ক্লাবের সাহিত্য ও ম্যাগাজিন সম্পাদক সাংবাদিক নুরুল আমিন বলেন, ‘এসব জুয়াড়ি যখন সর্বস্ব হারিয়ে ফেলে, তখন তারা সামাজিক নানা ধরনের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে। অনেকের পরিবারে কলহ-বিভেদ  দেখা দেয়। তাই এ ধরনের জুয়া বন্ধ করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।

এ ব্যাপারে লালমোহন থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে এ ধরনের জুয়াড়িদের ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টিএইচ